থাইরয়েড কি খেলে ভালো হয়: সুস্থ থাইরয়েডের জন্য উপকারী খাবার

Medically Reviewed By
Dr. Geetanjali Gupta
Written By Komal Daryani
on Jan 30, 2025
Last Edit Made By Komal Daryani
on Jan 30, 2025

থাইরয়েড আমাদের শরীরের একটি গুরুত্বপূর্ণ গ্রন্থি, যা হরমোন উৎপাদনের মাধ্যমে শরীরের মেটাবলিজম নিয়ন্ত্রণ করে। এটি সঠিকভাবে কাজ না করলে শরীরের বিভিন্ন সমস্যা দেখা দিতে পারে, যেমন ওজন বৃদ্ধি বা হ্রাস, ক্লান্তি, মনঃসংযোগের অভাব, চুল পড়া, হরমোনের ভারসাম্যহীনতা ইত্যাদি। তাই থাইরয়েড ভালো রাখতে সঠিক খাদ্যাভ্যাস গড়ে তোলা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কিছু খাবার থাইরয়েডের কার্যকারিতা বাড়ায়, আবার কিছু খাবার সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে। এখানে আমরা আলোচনা করবো, থাইরয়েডের জন্য উপকারী খাবার এবং কোন খাবার এড়িয়ে চলা উচিত।
থাইরয়েড ভালো রাখার জন্য গুরুত্বপূর্ণ খাবার
আয়োডিন সমৃদ্ধ খাবার
থাইরয়েড হরমোন তৈরির জন্য আয়োডিন অত্যন্ত জরুরি। আয়োডিনের অভাবে হাইপোথাইরয়েডিজম (থাইরয়েড হরমোনের ঘাটতি) দেখা দিতে পারে।
- সামুদ্রিক মাছ যেমন সালমন, টুনা, সার্ডিন
- সামুদ্রিক শৈবাল (Seaweed)
- দুধ ও দুগ্ধজাত খাবার (দই, ছানা, পনির)
- আয়োডিনযুক্ত লবণ
সেলেনিয়াম সমৃদ্ধ খাবার
সেলেনিয়াম থাইরয়েড গ্রন্থিকে সুরক্ষা দেয় এবং হরমোনের ভারসাম্য বজায় রাখে।
- বাদাম, বিশেষ করে ব্রাজিল নাট
- ডিম
- মাশরুম
- সূর্যমুখীর বীজ
জিঙ্ক সমৃদ্ধ খাবার
জিঙ্ক থাইরয়েড হরমোন উৎপাদনে সাহায্য করে এবং ইমিউন সিস্টেমকে শক্তিশালী করে।
- মাংস (গরু, খাসি, মুরগি)
- শাকসবজি যেমন পালং শাক
- কাজু বাদাম, চিনাবাদাম
ভিটামিন ডি সমৃদ্ধ খাবার
ভিটামিন ডি থাইরয়েডের সুস্থ কার্যকারিতার জন্য গুরুত্বপূর্ণ।
- সূর্যালোক
- গরুর কলিজা
- ডিমের কুসুম
- চর্বিযুক্ত মাছ যেমন সালমন
আয়রন সমৃদ্ধ খাবার
আয়রন রক্তে অক্সিজেন পরিবহনে সাহায্য করে এবং থাইরয়েড ফাংশনের জন্য অপরিহার্য।
- পালং শাক, মেথি শাক
- বিটরুট
- কিসমিস, খেজুর
- লাল মাংস
প্রোবায়োটিক সমৃদ্ধ খাবার
প্রোবায়োটিক অন্ত্রের স্বাস্থ্য ভালো রাখে, যা থাইরয়েডের কার্যকারিতার ওপর ইতিবাচক প্রভাব ফেলে।
- দই
- ছানা
- ঘোল
ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড সমৃদ্ধ খাবার
ওমেগা-৩ প্রদাহ কমায় এবং থাইরয়েডের কার্যকারিতা উন্নত করে।
- চিয়া বীজ
- ফ্ল্যাক্সসিড
- আখরোট
- সামুদ্রিক মাছ
যে খাবার এড়িয়ে চলা উচিত
গোয়াইট্রোজেন সমৃদ্ধ খাবার
কিছু খাবার থাইরয়েড হরমোন উৎপাদনে বাধা সৃষ্টি করে, বিশেষ করে যারা হাইপোথাইরয়েডিজমে ভুগছেন।
- কাঁচা বাঁধাকপি, ফুলকপি, ব্রকোলি
- সয়াবিন এবং সয়াজাত খাবার
- সরিষার শাক
অতিরিক্ত চিনিযুক্ত খাবার
চিনি ইনসুলিনের ভারসাম্য নষ্ট করতে পারে, যা থাইরয়েডের কার্যকারিতায় নেতিবাচক প্রভাব ফেলে।
- চকলেট, কেক, পেস্ট্রি
- সফট ড্রিঙ্ক, সোডা
- চিনি মেশানো জুস
প্রসেসড ফুড ও ফাস্ট ফুড
অতিরিক্ত প্রক্রিয়াজাত খাবারে উচ্চমাত্রার সোডিয়াম থাকে, যা থাইরয়েডের জন্য ক্ষতিকর।
- ইনস্ট্যান্ট নুডলস
- প্যাকেটজাত চিপস, বিস্কুট
- ফাস্ট ফুড
অ্যালকোহল ও ক্যাফেইন
অ্যালকোহল এবং অতিরিক্ত ক্যাফেইন থাইরয়েড হরমোনের ভারসাম্য নষ্ট করতে পারে।
- মদ, বিয়ার
- অতিরিক্ত চা, কফি
থাইরয়েড ভালো রাখতে কিছু গুরুত্বপূর্ণ টিপস
নিয়মিত শরীরচর্চা করুন
ব্যায়াম থাইরয়েড ফাংশনকে উন্নত করতে সাহায্য করে। প্রতিদিন অন্তত ৩০ মিনিট হাঁটা, জগিং বা যোগব্যায়াম করা উচিত।
মানসিক চাপ কমান
অতিরিক্ত মানসিক চাপ কর্টিসল হরমোন বাড়িয়ে তোলে, যা থাইরয়েডের জন্য ক্ষতিকর। মেডিটেশন, যোগব্যায়াম এবং পর্যাপ্ত ঘুম মানসিক চাপ কমাতে সাহায্য করে।
পর্যাপ্ত পানি পান করুন
শরীরে পানির অভাব হলে থাইরয়েড হরমোনের ভারসাম্য নষ্ট হতে পারে। প্রতিদিন অন্তত ২.৫-৩ লিটার পানি পান করা উচিত।
রেগুলার হেলথ চেকআপ করান
থাইরয়েড ফাংশন নিয়মিত পরীক্ষা করা উচিত, বিশেষ করে যদি কোনো উপসর্গ দেখা দেয়। রক্তপরীক্ষার মাধ্যমে থাইরয়েড হরমোনের মাত্রা জানা যায়।
উপসংহার
থাইরয়েড শরীরের একটি গুরুত্বপূর্ণ গ্রন্থি যা আমাদের মেটাবলিজম, শক্তি উৎপাদন, ওজন নিয়ন্ত্রণ এবং হরমোনের ভারসাম্য বজায় রাখতে সাহায্য করে। এটি যদি সঠিকভাবে কাজ না করে, তবে শরীরে নানা ধরনের সমস্যা দেখা দিতে পারে, যেমন ওজন বেড়ে যাওয়া বা কমে যাওয়া, অবসাদ, চুল পড়া, মনোযোগের অভাব এবং ত্বকের শুষ্কতা। তাই থাইরয়েড সুস্থ রাখতে খাদ্যাভ্যাসের দিকে বিশেষ মনোযোগ দেওয়া দরকার।
সঠিক খাবার গ্রহণের মাধ্যমে থাইরয়েড হরমোনের উৎপাদন ও কার্যকারিতা উন্নত করা সম্ভব। আয়োডিন, সেলেনিয়াম, জিঙ্ক, ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড, ভিটামিন ডি ও আয়রন সমৃদ্ধ খাবার থাইরয়েডের জন্য উপকারী। সামুদ্রিক মাছ, দুধ ও দুগ্ধজাত খাবার, ডিম, বাদাম, পালং শাক, ফ্ল্যাক্সসিড ও চিয়া বীজ থাইরয়েড হরমোন উৎপাদনে ইতিবাচক ভূমিকা রাখে। অন্যদিকে, প্রসেসড ফুড, উচ্চমাত্রার চিনি, ক্যাফেইন ও অ্যালকোহল থাইরয়েডের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে।
শুধুমাত্র খাদ্যাভ্যাস পরিবর্তনই যথেষ্ট নয়, এর পাশাপাশি নিয়মিত ব্যায়াম, পর্যাপ্ত পানি পান, মানসিক চাপ কমানো এবং নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষাও গুরুত্বপূর্ণ। স্ট্রেস হরমোন কর্টিসল বৃদ্ধি পেলে থাইরয়েডের কার্যকারিতার ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়ে, তাই মেডিটেশন ও যোগব্যায়াম মানসিক চাপ কমাতে সাহায্য করতে পারে।
আপনার যদি থাইরয়েড সংক্রান্ত সমস্যা থাকে বা উপসর্গ দেখা দেয়, তবে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া আবশ্যক। সঠিক সময়ে থাইরয়েড ফাংশন পরীক্ষা করলে সমস্যার প্রকৃতি বোঝা সহজ হয় এবং দ্রুত চিকিৎসা শুরু করা যায়।
Redcliffe Labs-এর মাধ্যমে নিয়মিত থাইরয়েড টেস্ট করুন
থাইরয়েডের সমস্যাগুলি প্রাথমিক পর্যায়ে শনাক্ত করা গেলে তা নিয়ন্ত্রণে রাখা অনেক সহজ হয়। Redcliffe Labs-এ ঘরে বসেই সহজে থাইরয়েড টেস্ট করাতে পারেন, যেখানে নির্ভুল রিপোর্ট ও দক্ষ ল্যাব টেকনিশিয়ানদের মাধ্যমে স্বাস্থ্য পরীক্ষা নিশ্চিত করা হয়। আজই বুক করুন এবং সুস্থ থাকুন!
Leave a comment
2 Comments
Krishna Barman
Feb 13, 2025 at 12:58 PM.
I need help me
Myhealth Team
Feb 13, 2025 at 1:04 PM.
Yes please let us know your query.
Riya Paul
Feb 4, 2025 at 7:30 PM.
Hi
Myhealth Team
Feb 5, 2025 at 6:36 AM.
Hi,
Please let us know your query.
Thankyou