কেন একটি লিপিড প্রোফাইল পরীক্ষা প্রয়োজন
Medically Reviewed By
Dr Divya Rohra
Written By Komal Daryani
on Jun 1, 2023
Last Edit Made By Komal Daryani
on Mar 18, 2024
চিকিৎসকের সাথে পরামর্শ করা মাত্রই তারা প্রায়শই বেশ কিছু টেস্ট করার কথা বলেন। সাধারণত লিপিড প্রোফাইল এর মধ্যে একটি। এখন প্রশ্ন হলো এই লিপিড প্রোফাইল কি?
লিপিড আর্থাত চর্বি, এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ চিকিৎসা পরীক্ষার বিষয় যা লিপিড প্রোফাইল নামে পরিচিত। অতিরিক্ত চর্বি জমে রক্তনালীর ব্যাস সংকুচিত করতে পারে। ফলে হার্টে রক্ত সরবরাহ ব্যাহত হয় এবং ‘হার্ট অ্যাটাক’ হতে পারে। এর থেকে বাঁচার জন্য আমাদের একটি সুস্থ জীবনযাপন করা উচিত। বিশদে জানতে এই আর্টিকেলটি পড়ার অনুরোধ রইলো।
লিপিড প্রোফাইল পরীক্ষা কি?
লিপিড প্রোফাইল এর জটিলতা সম্পূর্ণরূপে বোঝার জন্য, লিপিড গুলো আসলে কী তা প্রথমে আমাদের জানা দরকার। মূলত, লিপিড হল ফ্যাটি অ্যাসিড যা কোষের পর্দা তৈরী করে এবং মানব দেহে এটির দ্বারা শক্তি উৎপন্ন হয়।
যখন লিপিডের পরিমান বাড়ে, তখন এটি রক্ত প্রবাহকে একটি বিপজ্জনক অবস্থার দিকে নিয়ে যেতে পারে। যার ফলে শেষ পর্যন্ত হার্ট ব্লকেজ, হার্ট অ্যাটাক এবং স্ট্রোক পর্যন্ত হওয়ার সম্ভবনা থাকে। তাই লিপিডের মাত্রা নিয়মিত পর্যবেক্ষণ করা খুব দরকার। এতে শরীরের গুরুতর জটিলতাগুলো প্রতিরোধ করা যায় এবং প্রয়োজনীয় সতর্কতা অবলম্বন করা সম্ভব হয়।
লিপিড প্রোফাইল এর মাধ্যমে আমরা যে টেস্ট করে থাকি, সেগুলো হলো কোলেস্টেরল, ট্রাইগ্লিসারাইড, এইচডিএল, এলডিএল,ভি এলডিএল কোলেস্টেরলের দুটি স্বতন্ত্র শ্রেণীবিভাগ রয়েছে: কম-ঘনত্ব যুক্ত লাইপোপ্রোটিন(এলডিএল) আর বেশি-ঘনত্ব যুক্ত লাইপোপ্রোটিন(এইচডিএল)। এইচডিএল কে ভালো কোলেস্টেরল হিসেবে বিবেচনা করা হয়, আর এলডিএল কে খারাপ কোলেস্টেরল হিসেবে গণ্য করা হয়। আদর্শ ভাবে সুস্বাস্থ্য বজায় রাখার জন্য এলডিএল এর মাত্রা 100-এর নিচে রাখা উচিত। পুরুষের কমপক্ষে ৫০ এবং মহিলার ৬০ বা তার বেশি কোলেস্টেরলের মাত্রা উপযুক্ত।
নিয়মিত কোলেস্টেরল পরীক্ষা, সামগ্রিক সুস্থতা এবং হার্ট অ্যাটাক প্রতিরোধের জন্য অপরিহার্য। এটি লক্ষ করা যে আমাদের দেশে বয়স্ক ব্যক্তিদের সাথে সাথে অল্পবয়সী ব্যক্তিরাও কোলেস্টেরল-সম্পর্কিত সমস্যায় ভুগছেন। অতএব, এই সম্ভাব্য জীবন-হানী থেকে সতর্ক থাকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
কেন একটি লিপিড প্রোফাইল পরীক্ষা প্রয়োজন?
আমাদের মধ্যে এমন এক সংখ্যক ব্যক্তি রয়েছে যাদের দৈহিকতা প্রকাশ্য না হলেও তারা ডিসলিপিডেমিয়া যন্ত্রণার সাথে লড়াই করছে।যখন কারো রক্তে চর্বির মাত্রা অস্বাভাবিক থাকে, তখন এই অবস্থাটিকে ডাক্তারি ভাষায় "ডিসলিপিডেমিয়া" বলা হয়। এর ফলে বাড়ে স্ট্রোক এবং হার্ট অ্যাটাকের সম্ভাবনা।
আরো স্পষ্ট করে বললে রক্ত প্রবাহের মধ্যে অত্যাধিক মাত্রায় কোলেস্টেরল আপনার ধমনীর দেয়ালের মধ্যে চর্বি জমতে সাহায্য করে। ফলস্বরূপ, এই ধমনীগুলো সংকুচিত এবং দৃঢ় হবে, রক্ত প্রবাহকে বাধা দেয়। উপরন্তু, রক্ত জমাট বাঁধার সম্ভাবনা ব্যাপকভাবে বেড়ে যাবে।
একজনের শরীরে কোলেস্টেরলের মাত্রা বিশ্লেষণ ধমনীর মধ্যে প্লাক তৈরি হওয়ার সম্ভাবনা মূল্যায়ন করার জন্য একটি মূল্যবান হাতিয়ার হিসেবে কাজ করে। বিশেষ গবেষণায় বারবার প্রমাণ হয়েছে যে এইচডিএল রক্তে খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রাকে নিয়ন্ত্রণ করে। যার ফলে মৃত্যু, হার্ট অ্যাটাক, স্ট্রোক এবং ক্যাথেটারাইজেশন বা বাইপাস সার্জারির মতো আক্রমণাত্মক কার্ডিয়াক পদ্ধতির প্রয়োজনীয়তা উল্লেখযোগ্যভাবে কমে যায় ।
এই পরীক্ষার জন্য নিয়মিত স্ক্রীনিং কার জন্য সুপারিশ করা হয়?
ক্ষতিকারক কোলেস্টেরলের উচ্চ মাত্রা ধমনীতে জমা হয়, যার ফলে কার্ডিওভাসকুলার রোগ এবং সেরিব্রাল ইনফেকশন হওয়ার সম্ভবনা বেড়ে যায় । সুতরাং, 35 বছরের বেশি বয়সী ব্যক্তিদের প্রতি বছর লিপিড প্রোফাইল করা উচিত। এটা ছাড়াও:
- যারা নিয়মিত ব্যাম করে না
- ডায়াবেটিস রোগী
- ধূমপান ও অন্যান্য নেশা করেন
তাদেরকে ও লিপিড প্রোফাইল করা অত্যন্ত প্রয়োজনীয়।
এই পরীক্ষাটি কি ভাবে সুপারিশ করা হয়?
অসংখ্য ব্যক্তি এই পরীক্ষার জন্য ফাস্টিং এর প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করেন। ১২ ঘন্টা খাবার থেকে বিরত থাকা বাধ্যতামূলক নয়। মাত্র ৮ ঘন্টা খালি পেটে থাকার পরে কেউ সহজে এই পরীক্ষা শেষ করতে পারে। এটা বলার অপেক্ষা রাখে না যে এটি কোন উল্লেখযোগ্য সমস্যা তৈরি করবে না।
কোলেস্টেরল প্রতিকার
- তেল, মশলা, লাল মাংস, চিনি, বড় মাছ এবং মাছের তেল খাওয়ার ফলে স্বাস্থ্যগত জটিলতা হতে পারে।
- অতিরিক্ত পরিমান তেল, ঘি, মাখন, চিজ রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা বৃদ্ধি করতে পারে।
- প্রতিদিন 30 মিনিটের ব্যায়াম, হাঁটা বা প্রাণায়াম একান্ত কাম্য।
- মদ্যপান এবং ধূমপান বা যে কোনো নেশা থেকে বিরত থাকুন।
জীবনের প্রাণশক্তি হলো রক্তনালীর সুস্থতা এবং রক্ত প্রবাহের স্বচ্ছতা! বিভিন্ন রোগের মূল উৎস এ আমাদের রক্তের অস্বাভাবিক চলাচল। অতয়েব আজ থেকেই যত্ন নেয়া কাম্য। সুতরাং, সতর্কতা অবলম্বন করুন এবং চিকিৎসক এর পরামর্শে মনোযোগ দিন।