Dengue Symptoms in Bengali: ডেঙ্গু রোগের লক্ষণ স্বরূপ স্ববিস্তর আলোচনা
Medically Reviewed By
Dr Divya Rohra
Written By Komal Daryani
on Sep 14, 2023
Last Edit Made By Komal Daryani
on Mar 18, 2024
ডেঙ্গু একটি মশা বাহিত রোগ।এডিসমশা এটি ছড়ায়। জ্বর ডেঙ্গুর প্রধান লক্ষণ। অনেক ব্যক্তি এটিকে ভাইরাল জ্বর বলে উড়িয়ে দেন। এ কারণে ডেঙ্গু মারাত্মক ক্ষতিকর হতে পারে বলে দাবি চিকিৎসকদের। ডেঙ্গু জ্বর এবং ভাইরাল জ্বর একই জিনিস না হওয়া সত্ত্বেও, ডেঙ্গু জ্বর এখনও একটি অপেক্ষাকৃত বিপজ্জনক অবস্থা। এই ব্লগে আমরা ডেঙ্গু নিয়ে সবিস্তারে আলোচনা করবো।
ডেঙ্গু জ্বরের কারণ
ডাক্তারদের মতে পরিবেশে উপস্থিত কোনো ভাইরাস যদি এডিস মশার মধ্যে থাকে এবং সেই মশা যদি কোনো ব্যক্তিকে কামরায় তাহলে ডেঙ্গু হওয়ার সম্ভবনা থাকে। স্ত্রী এডিস মশা এই সংক্রমণের কাজটি করে থাকে, কোনো ডেঙ্গু আক্রান্ত ব্যক্তির থেকে সুস্থ ব্যক্তির মধ্যে। ডেঙ্গু জ্বর রোগ বহনকারী মশা দ্বারা কামড়ানোর ৪ থেকে ৬ দিনের মধ্যে শুরু হয়। এখন ডেঙ্গু বহনকারী এডিস মশা আক্রান্ত ব্যক্তিকে কামড়ালে জীবাণুমুক্ত এডিস মশা রোগ ধারণ করে। এভাবেই ডেঙ্গু ভাইরাস একজন থেকে আরেকজনে মধ্যে ছড়ায়।
ডেঙ্গু জ্বরের কারণ এডিস মশা রাতে কামড়ায় না । এডিস মশা সবচেয়ে বেশি সক্রিয় থাকে ভোরবেলা এবং সন্ধ্যার দিকে। এডিস মশা বড়, লম্বা, এবং ডোরাকাটা পা থাকে।
ডেঙ্গু লক্ষণ
ডেঙ্গু লক্ষণ গুলো সময়সীমা ৪ থেকে ৬ দিন, এবং এটি ১০ দিন পর্যন্ত স্থায়ী হতে পারে। যদি নিম্নলিখিত উপসর্গগুলির মধ্যে কোনটি গুরুতর ভাবে প্রকাশ পায়, তবে আপনাকে অবশ্যই ডাক্তারের নির্দেশাবলী মেনে চলতে হবে।
- জ্বর এবং শরীরে ব্যথা
ডেঙ্গু রোগের প্রাথমিক লক্ষণ হলো অত্যধিক জ্বর এবং শরীরে ব্যথা। ৯৯ এবং ১০৫ ডিগ্রি ফারেনহাইট এর তাপমাত্রা থাকতে পারে । ঘাম ছেড়ে জোর কমে যাওয়ার পর ও আবার জোর আসতে পারে।
- হাতে পায়ে ও কোমরে ব্যাথা
ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত ব্যক্তির পা এবং হাতে ও কোমরে ব্যথা হতে পারে ।
- শ্বাস প্রশ্বাসে সমস্যা
ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত ব্যক্তির অত্যধিক শ্বাস প্রশ্বাসের সমস্যা হতে পারে, যা শারীরিক সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে।
- চোখে জ্বালা এবং অস্থিরতা
ডেঙ্গু রোগে চোখে লালচে ভাব দেখা দিতে পারে, যা চোখে একটি তীক্ষ্ণ জ্বালা এবং অসুবিধা উৎপন্ন করতে পারে যা ডেঙ্গু জ্বরের একটি সাধারণ লক্ষণ।
- পেট ব্যথা এবং অসুস্থতা
ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিদের পেটে ব্যথা হতে পারে এবং তারা অসুস্থ অনুভব করতে পারে।
- কাশি এবং সর্দি:
ডেঙ্গু রোগ সাধারণভাবে কাশি এবং সর্দির সাথে সম্পর্কিত হতে পারে।
- প্রস্রাব:
ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিদের শরীর থেকে প্রস্রাবের পরিমাণ বেড়ে যেতে পারে।এটি ছাড়াও দ্বিতীয়বার ডেঙ্গু সংক্রমণের পর কোনো ব্যক্তি যদি আবারও এই রোগের আক্রান্ত হয় তাহলে এর তীব্রতা বেড়ে যায়। তাই, যারা আগে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়েছেন তাদের অতিরিক্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণের পরামর্শ দেওয়া হয়। ডেঙ্গু ভাইরাস মানবদেহের রক্তনালীর ক্ষতি করে। ফলস্বরূপ রক্তনালীতে গর্ত তৈরি হয়। রক্ত প্রবাহে, কম প্লেটলেট থাকে। এর ফলে শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ থেকে রক্তপাত এবং অন্যান্য জটিলতার কারণে রোগীর শেষ পর্যন্ত মৃত্যু হতে পারে।
ডেঙ্গু রোগের প্রতিকার
যদি আপনি ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত হন, তাহলে চিকিৎসা করার জন্য সঠিক পদক্ষেপগুলো গ্রহণ করা গুরুত্বপূর্ণ। নিম্নলিখিত পদক্ষেপগুলি নেওয়া হতে পারে:
- ডেঙ্গু রোগীর খাবার
ভিটামিন সি (সাইট্রাস ফল, বেরি এবং শাকসবজিতে পাওয়া যায়), জিঙ্ক (সামুদ্রিক খাবার, মটরশুটি এবং বাদাম পাওয়া যায়), আয়রন (মাংস, মটরশুটিতে পাওয়া যায়), এবং ওটমিল (দ্রুত কার্বোহাইড্রেট এবং ফাইবার শোষণের জন্য গুরুত্বপূর্ণ) হল সমস্ত পুষ্টি যা ডেঙ্গু রোগীদের প্রচুর প্রয়োজন। উচ্চ পটাশিয়াম, ভিটামিন ই, ভিটামিন কে, ফোলেট এবং পেঁপে খাওয়া প্রয়োজন।
উপরন্তু, শরীরকে হাইড্রেট করার জন্য প্রচুর পরিমাণে জল পান করা প্রয়োজন। ডেঙ্গু রোগীদের হজম করা কঠিন এমন খাবার এড়িয়ে চলতে হবে। নন-ভেজিটেরিয়ান খাবার, চর্বিযুক্ত, তৈলাক্ত খাবার এবং সব ধরনের ভাজা খাবার।
- ডাক্তারের পরামর্শ
যত দ্রুত সম্ভব ডেঙ্গু রোগের সন্দেহ থাকলে, ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া উচিত। আপনার ডেঙ্গু হলেই ডাক্তাররা ওষুধ হিসেবে প্যারাসিটামল খাওয়ার পরামর্শ দেন। অনেকে শরীরের বিভিন্ন অংশে তীব্র ব্যথা কমানোর জন্য ব্যথানাশক ওষুধ ব্যবহার করে। এই পরিস্থিতি বিপজ্জনক হতে পারে বলে সতর্কতা জারি করছেন চিকিৎসকরা। কারণ ব্যথানাশক ওষুধের ব্যবহার অভ্যন্তরীণ রক্তপাত ঝুঁকি বাড়ায়, যা মারাত্মক হতে পারে।
যেগুলো করা উচিত না
- ধূমপান এড়িয়ে চলুন কারণ এটি অন্যান্য নেতিবাচক প্রভাবগুলি মধ্যে রক্তের গঠন পরিবর্তন করে।
- আপনার প্লেটলেট গণনা সম্পর্কে উদ্বিগ্ন হওয়া উচিত নয়। জ্বর কমে গেলে প্লেটলেট গুলো নিজে থেকেই বাড়তে শুরু করে। এই সময়ে আপনার স্বাস্থ্যকর ফল এবং রক্ত বৃদ্ধিকারী খাবার খাওয়া উচিত।
- আপনি যদি খুব অসুস্থ হন বা আপনার প্লেটলেট খুব কম থাকে, তাহলে আপনার বাড়িতে থাকা উচিত নয়। অবিলম্বে একজন ডাক্তারকে কল করুন এবং যথাযথ ব্যবস্থা নিন।
সতর্কতা ও প্রতিরক্ষা:
ডেঙ্গু রোগ একটি জীবনঘাতক রোগ হতে পারে, তবে সতর্কতা এবং প্রতিরক্ষা প্রদান করে আমরা নিজেদের এবং অন্যকে ডেঙ্গু রোগ থেকে সুরক্ষিত রাখতে পারি।
- মশা ডেঙ্গু রোগ বহন করে। সুতরাং, আপনার পরিবারের মশার প্রকোপ থেকে রক্ষা করুন।
- বাড়ির চারপাশে জল জমতে দেওয়া থেকে বিরত থাকুন। জমা জলে মশা বংশবিস্তার করতে পারে। জল জমে না থাকলে মশা নিয়ন্ত্রণ করা যায়। সপ্তাহে অন্তত একবার, এলাকাগুলি পরীক্ষা করুন। ফুলের পাত্র, গাড়ির টায়ার বা গাছের টবে জমে থাকা জল ফেলে দিন।
- ঢেকে রাখা পোশাক, যেমন লম্বা হাতা, লম্বা প্যান্ট, মোজা এবং জুতা পরুন।
- ডেঙ্গু ভাইরাস বহনকারী মশা ভোর ও সন্ধ্যার মধ্যে সবচেয়ে বেশি সক্রিয় থাকে। এই সময় বাড়তি সতর্কতা অবলম্বন করুন।
- রাতে ঘুমাতে গেলে মশারি ব্যবহার করুন।
- পারমেথ্রিন মতো রাসায়নিক ব্যবহার করুন যা মশা তাড়ায়।
Read about Dengue with complete details: -
উপসংহার
ডেঙ্গু জ্বর হওয়া সাধারণ ব্যাপার। কিন্তু উপেক্ষা করলে এই অবস্থা মারাত্মক হতে পারে। শহুরে এলাকায় এটি বেশি দেখা যায়। তাই নগরবাসীকে আরও সজাগ ও সচেতন হতে হবে। বিশেষ করে ডেঙ্গু আক্রান্তদের বেশি করে সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। সতর্ক থাকুন, সুস্থ থাকুন। প্রয়োজনে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
Leave a comment
1 Comments
অমিত
Oct 21, 2024 at 7:34 AM.
Helpfull information Thank you
Myhealth Team
Oct 21, 2024 at 1:07 PM.
You're very welcome! We are glad you found the information helpful. If you have any more questions, feel free to ask!